রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৩০ পূর্বাহ্ন
মোংলা প্রতিনিধি
মোংলা বন্দর জেটির অভ্যন্তর থেকে আমদানী করা মালামাল প্রতিনিয়ত পাচার করছে একটি সিন্ডিকেট চক্র। এর মধ্যে ওই চক্রের চার সরদারের বক্স তল্লাশি বেশ কিছু মুল্যবান মালামাল জব্দ করেছে বন্দর নিরাপত্তা শাখা। তবে অদৃশ্য কারনে এখনো তাদের বিরুদ্ধে নেয়া হয়নি কোন ব্যবস্থা। জেটি থেকে মালামাল পাচার ও নিজেদের আত্বরক্ষায় ওই চক্রের সদস্যরা শ্রমিক সরদার, সুইপারসহ নানা পেশার আইডিকার্ড গ্রহন করে বন্দরের ট্রাফিক শাখা থেকে। পুর্বেও বিভিন্ন সময় কোটি কোটি টাকার মালামাল পাচার হলেও বন্দরের নেই কোন উদ্দ্যোগ। এভাবে চলতে থাকলে মোংলা বন্দর দিয়ে পন্য আমদানী কমে আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সরকারের নেয়া নানা উদ্যোগের ফলে মোংলা বন্দরের জেটিতে কসমেটিকস, সিকিৎসা সামুগ্রী, প্রসাধনীসহ কন্টেইনার বাহি নানা পন্যের আমদানী বেড়েছে। আর ওইসব পন্য খালাসের জন্য বন্দরের সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে জেঠি সর্দারের কার্ড নেয়ার বিধান রয়েছে শ্রমিক পরিচালনার জন্য। আর এ সুযোগে একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট চক্র বন্দরের ট্রাফিক শাখার উচ্চমান সহকারী এক কর্মচারীকে ম্যানেজ করে ওই কার্ড সংগ্রহ করেন। এর পর শুরু করে জেটি থেকে আমদানী পন্য কৌশলে বাহির করে পাচারের মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ টাকা উপার্জনের। মোংলা বন্দরের উর্দ্ধোতন নিরাপত্তা কর্মকর্তা মোঃ আইয়ুব আলী জানান, দীর্ঘদিনের নানা অভিযোগের পর ২৮ অক্টোবর জেটিতে রাখা শ্রমিক সরদার সাগর শেখ, নুরুল আমিন, মোঃ সেলিম ও নজরুলের চারটি বক্স তল্লাশি করে মোংলা বন্দরের নিরাপর্ত্তা বিভাগ। ওই সময় জব্দ করা হয় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ব্যবহত ৬টি পাটি ¯েপ্র, সাইকেলের লুকিং গ্লাস বক্স, ১৫ আইটেমের ইজি বাইকের মালামাল, চল্লিশ পিচ তালা, ৪৩ ডজন বলপেন, লিপিষ্টিক ছয় বক্স, সাইকেলের ষ্টান্ড, গাড়ীর হর্ণ, ষ্টীলের টানা, কব্জা, জুতা, শিতের জ্যাকেটসহ বিভিন্ন মালামাল জব্দ করা হয়। তবে চুরির ঘটনায় জড়িত সরদারদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এ বিষয়ে তিনি বন্দরের নিরাপত্তা প্রধান মোঃ আবদুল আলীম জানান, ঘটনার সময় তিনি ছুটিতে থাকায় এ বিষয়ে পুরো পুরি তদন্ত শেষ করতে পারেন নাই। তবে দ্রুত অধিকতর তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বন্দরের একটি সুত্রে জানাযায়, এর আগে সংরক্ষিত জেটি থেকে দেড়কোটি টাকা মুল্যের বিলাসবহুল গাড়ী, কন্টেইনার থেকে কয়েক কোটি টাকা মুল্যের গামেন্টস পন্য চুরির ঘটনা ঘটে। জেটি থেকে মালামাল ছুরিসহ এমনসব ঘটনায় সহযোগীতার অভিযোগে চাকরীচ্যুত করা হয়েছে বন্দরের এক সুইপার ও এক শ্রমিক কে। এর আগে চলতি বছরের ২০ আগষ্ট জেঠিতে আমদানী করা মোবাইল যন্ত্রাংশ ও প্রসাধনী সামগ্রী চুরির সাথে জড়িত থাকায় শ্রমিক মোঃ রুবেল, নাসির তালুকদার ও মোঃ জুয়েল কে হাতেনাতে আটক করে মোংলা থানায় হস্তান্তর করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
এ দিকে বিদেশ থেকে আমদানী করা কিছু পন্য শ্রমিকরা প্রায় সময় বিক্রি করছে পুরাতন মোংলা বন্দরের সিংগাপুর মার্কেটসহ অন্যান্য স্থানে। নাম প্রকাশ না করা সর্ত্বে এক শ্রমিক জানান, জেটিতে কর্মরত শ্রমিক সরদাররা কন্টেইনারের পেটি ভেঙ্গে ছুরি করে বিভিন্ন আমদানী করা মালামাল। ওইসব ছুরির মালামাল বড় চালান গুলো খুলনায় বিক্রি করে থাকেন। তাদের ব্যবহারের জন্য এক দুইটি দিলে তারা সেটি মোংলায় বিক্রি করেদেন। ওই শ্রমিকের দাবি ছুরির ঘটনার সাথে বন্দরের নিরাপর্ত্তা শাখার কয়েকজন ও আমদানীকৃত পন্যের সংশ্লিষ্ট সিএন্ডএফ এজেন্ট’র কতিপয় কর্মকর্তারা জড়িত থাকেন। তাদের গাড়িতে ওইসব মালামাল বের করা হয়। ওই শ্রমিকের ভাস্যমতে, লেবার সরদারের কাজ করে জেটির কয়েক জন বনে গেছেন কোটি কোটি টাকার মালিক। গাড়ীতে কিভাবে মালামাল জেঠি থেকে বের হয় ,এমন প্রশ্নের জবাবে বন্দরের উর্দ্ধোতন নিরাপত্তা কর্মকর্তা আয়ুব আলী জানান, তথ্য থাকলে তারা গাড়ী তল্লাশি করে থাকেন। কিছু দিন পূর্বে কাস্টমস কর্মকর্তার গাড়ী তল্লাশি করে বেশ কিছু বিদেশি জুতা জব্দ করেছেন তারা।